কমলগঞ্জের আলোচিত নাজমুল হত্যা মামলার মূল আসামি গ্রেফতার

 



নিউজ ডেস্কঃ মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার চৈত্রঘাট বাজার বণিক সমিতির সভাপতি নাজমুল হাসানকে কুপিয়ে হত্যা করার প্রদান আসামী তফাজ্জল আলী (৩৫)কে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) দুপুরে পুলিশ সুপার সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া।

পুলিশ সুপার বলেন, গত ৩১ অক্টোবর দুপুর দেড় টার সময় মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার চৈত্রঘাট বাজার বণিক সমিতির সভাপতি নাজমুল হাসানকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয় যার প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে ভিকটিমের মৃত্যু হয়। ঘটনাটি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে এবং ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে সারাদেশে আলোড়ন তেরি হয়। এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই বাদী হয়ে কমলগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

তিনি আরো বলেন, মামলাটি তদন্তকালে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গ্রেফতারকৃতদের অবস্থান সনাক্ত করে ৪ নভেম্বর বৃহস্পতিবার ভোররাতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবিএম মোজাহিদুল ইসলাম পিপিএম এর নেতৃত্বে মৌলভীবাজার জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি চৌকস দল ঢাকার কমলাপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে হত্যা মামলার মূল আসামী তফাজ্জল আলী (৩৫) কে তার এক সহযোগী খালেদ মিয়া (৫৩) সহ গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামী তফাজ্জল আলীর কাছ থেকে ১ টি পাসপোর্ট, এমিরেটস এয়ারলাইন্সের টিকেট, ২ টি ড্রাইভিং লাইসেন্স, ২ টি মোবাইল ফোন, ৫ টি দেশিবিদেশি সিমকার্ড ও ৩৩৮ দিরহাম উদ্ধার করা হয়। সহযোগী খালেদ মিয়ার কাছ থেকে নগদ ১৯৩০০ টাকা, একটি মোবাইল ও একটি সিমকার্ড উদ্ধার করা হয়।

উল্লেখ্য গত ১ নভেম্বর ২০২১ ভোররাতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ও মাইক্রোবাস সহ এজাহারনামীয় ২ জন আসামী জুয়েল (৪৫) ও কাজী আমির হোসেন হীরা(৪০) কে গ্রেফতার করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তফাজ্জল আলী হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায় বিগত ২ জুন ২০২০ তারিখ নিহত নাজমুল আসামি জুয়েলের উপর হামলা করে পঙ্গু করে দেয়। মূলত প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা থেকে হত্যাকান্ডটি সংঘটিত হয়েছে। আসামিরা তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য ১০/১৫ দিন আগে থেকে ভিকটিমকে নজরদারি করতে থাকে। ঘটনার দিন হামলা পরিকল্পনার অংশ হিসাবে ভাড়ায় চালিত একটি মাইক্রোবাসে করে চৈত্রঘাট কালী মন্দিরের সামনে হামলাকারীরা অপেক্ষা করতে থাকে। ঐদিন বাজার কিছুটা জনশূন্য হলে ভিকটিম নাজমুল একা পেয়ে তফাজ্জলের নেতৃত্বে ৮/১০ জনের একটি দল ধারালো অস্ত্র দিয়ে নৃশংসভাবে কুপিয়ে দ্রুত সটকে আত্মগোপনে চলে যায়। জিজ্ঞাসাবাদে তফাজ্জল আরো জানায় পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী বিদেশে পলায়নের জন্য আগে থেকেই প্লেনের টিকেট কাটা ছিল। সংবাদ সম্মেলন শেষে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া জানান মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ সকল ধরনের হত্যা,ধর্ষণ ও নৃশংস সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে সবসময়ই আপোষহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এ ঘটনায় জড়িতদের বিচারের সম্মুখীন করতে দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে কাজ করছে জেলা পুলিশ। তিনি মৌলভীবাজার বাসীকে নিরাপদ রাখতে সাংবাদিকসহ সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। 

Post a Comment

Previous Post Next Post