অনলাইন
ডেস্কঃ কাজী সাইফুর রহমান বাংলাদেশের সিলেট জকিগঞ্জের ছেলে। ব্রিটেনে
বিশ্বের প্রথম হালাল এয়ারলাইন্স প্রতিষ্ঠা করে তিনি আলোচিত হন বিশ্বজুড়ে।
কর্ম জীবনের শুরুতে কাজ করতেন টয়লেট ক্লিনার হিসেবে। সেখান থেকে এখন তিনি
এয়ারলাইন্সের মালিক।
দেশটির মূলধারার গণমাধ্যমে উদ্যোক্তা হিসেবে
জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। ২০১৭ সালে ব্রিটিশ মুসলিম অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হন
কাজী সাইফুর রহমান।
যুক্তরাজ্যে মাত্র ১৩ বছর বয়সে তিনি পাড়ি জমান।
স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে চাকরি নেন এয়ারপোর্টে বিমানের টয়লেট ক্লিনার হিসেবে।
কিন্তু আত্মপ্রত্যয়ী কাজী সাইফুর চাইতেন বড় কিছু করতে। সে লক্ষ্যে জমাতে
থাকেন অর্থ। বাংলাদেশি টাকায় মাত্র ৭০ হাজারে শুরু করেন আতরের ব্যবসা।
ছোট্ট আতরের দোকান থেকে একসময় তিনি লন্ডনে গড়ে তোলেন বিশাল পারফিউম শপ।
কিন্তু
সাইফুর জানান, তখনও তিনি তার আসল স্বপ্ন থেকে অনেক দূরে ছিলেন। উড়োজাহাজ
দেখলেই তার ইচ্ছে হতো মালিক হওয়ার। এদিকে মুসলিম হওয়ায় লন্ডনের মাটিতে
হালাল খাবার নিয়ে পড়তে হতো বিপাকে। চাইতেন এমন একটি উড়োজাহাজের মালিক হতে
যা চলবে ইসলামিক অনুশাসন মেনে। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে তিনি এগোতে থাকেন
একটু একটু। বিমানবালার পোশাক, পানিয় ও ইত্যাদি নিয়ে করতে থাকেন নানা
পরিকল্পনা।
অনেক পরিকল্পনার পর একদিন ঘোষণা দিয়েই চালু করে বিশ্বের
প্রথম হালাল এয়ারলাইন্স ‘ফরনেস এয়ারওয়েজ’। এয়ারলাইন্স চালু করলেও তার ছিল
না কোনো উড়োজাহাজ কিংবা রুট পারমিট। কাগজে আবদ্ধ থাকা এয়ারলাইন্সকে বাস্তবে
রূপ দিতে উঠে পড়ে লাগলেন তিনি। কাজী সাইফুর প্রথমে চেয়েছিলেন
মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক ফ্লাইট পরিচালনা করতে। কিন্তু এত বেশি অর্থের জোগান
দিতে পারবেন না জেনে তিনি দৃষ্টি দেন যুক্তরাজ্যের অভ্যন্তরীণ রুটে।
মার্কেটিংয়ের
জন্য ব্যবহার করেন তার পুরনো গাড়িটিকে। প্রচারণা শুরু করেন সামাজিক
যোগাযোগ মাধ্যমে। ইতিবাচক সাড়ার পাশাপাশি অনেক নেতিবাচক মন্তব্যও শুনতে
হয়েছে তাকে। অনেকে সরে আসেন তার ব্যবসায়িক চুক্তি থেকে। এমন অপ্রত্যাশিত
ধাক্কায় কিছুটা হতাশ হয়ে সাইফুর চলে আসেন বাংলাদেশে। কয়েকদিন কাটিয়ে আবার
যান যুক্তরাজ্য, পুরো উদ্যোমে আবারো শুরু করেন কাজ।
অর্থনৈতিক
সীমাবদ্ধতার কারণে সাইফুর এবার দৃষ্টি দেন ছোট উড়োজাহাজ সংস্থাগুলোর দিকে।
ফরনেস এয়ারওয়েজ এর প্রথম বিমান হিসেবে তিনি চুক্তি করে ১৯ সিটের একটি
চার্টার্ড বিমান সংস্থার সঙ্গে। তারপর এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। ফরনেস
এয়ারওয়েজ এর প্রথম উড়োজাহাজ উড়লো আকাশে। এখন তার স্বপ্ন- সামনে যতদূর যাওয়া
যায়।
সাইফুরের ইচ্ছা ভবিষ্যতে ‘টয়লেট ক্লিনার থেকে উড়োজাহাজ মালিক’ নামে একটি বই তিনি লিখবেন।