কুলাউড়ায় রেলের পোর্টারের চাঁদাবাজী-হুমকিতে তটস্ত সংশ্লিষ্টরা


বিশেষ প্রতিনিধিঃ কুলাউড়ায় রেলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নাম ভাঙিয়ে স্টেশনের কর্মচারী ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের হুমকি এবং চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়া গেছে  নুরুল ইসলাম সুমন নামের এক মাদক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। সিলেট রেল স্টেশনে পোর্টারের চাকুরির দায়িত্ব থাকলেও প্রভাব খাটিয়ে সেখানে দায়িত্ব পালন না করে কুলাউড়ায় এসে নুরুল ইসলাম সুমন প্রতিনিয়ত হুমকি দিয়ে আসছে বলে জানান রেলে কর্মরত একাধিক ব্যাক্তি। সম্প্রতি নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবি ও হামলার শিকার মো. মুজিবুর রহমান নামে রেল স্টেশন সংলগ্ন এক চা (টি-স্টলের) ব্যবসায়ী রেলওয়ে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগ ও রেলওয়ে কর্মচারী সূত্রে জানা যায়, নুরুল ইসলাম সুমন দীর্ঘদিন ধরে  মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলো। কুলাউড়া থানা পুলিশ বেশ কয়েকবার মাদক ব্যবসায় জড়িত থাকায় গ্রেফতার করে। তার বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মাদক মামলা রয়েছে। এসময় রেল স্টেশন কর্মচারীসহ স্থানী ব্যভসায়ীদের চাঁদা দাবি ও হুমকি প্রদান করতো। সম্প্রতি তাঁর বড় বোন যুব মহিলা লীগ মিরপুর, ঢাকা শাখার সহ সাংগঠনিক সম্পাদিকা শিরিন আক্তার বেলির সহযোগিতায় সিলেট রেল স্টেশনে পোর্টারের  (লেবার) চাকুরি পায় সুমন। চাকুরি পাওয়া পর আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে সে। প্রভাব দেখিয়ে কর্মস্থল সিলেট স্টেশনে দায়িত্ব পালন না করে কুলাউড়ায় এসে বাওলাদেশ রেলওয়ের ঢাকা বিভাগের ডিআরএমে’র তাঁর নাম ভাঙিয়ে রেল কর্মচারিদের এবং স্থানীয় ক্ষুদে ব্যবসায়ীদের উৎপাত ও হুমকি দিয়ে আসছে। সম্প্রতি কুলাউড়া রেলওয়ে রিক্রিয়েশন ক্লাবের পাশে অবস্থিত টি-স্টলের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মুজিবুর রহমানের দোকানে গিয়ে নুরুল ইসলাম সুমন আরো সহযোগি নিয়ে চা নাস্তা করে। পরে মুজিবুর চা-নাস্তার বিল সুমনের কাছে চাইলে উল্টো তাঁকে উচ্ছেদের হুমকি প্রদান করে এবং চাঁদা দাবি করে। এসময় অপারগতা প্রকাশ করলে সহযোগিদের নিয়ে গেলে মুজিবুরের উপর হামলা চালায় সুমন। এতে মারাত্মক আহত হন মুজিবুর। আহতবস্থায় স্থানীয় লোকজন মুজিবুরকে উদ্ধার করে কুলাউড়া হাসপাতালে নিয়ে যান। এঘটনায় ভুক্তভূগী কুলাউড়া রেলওয়ে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

কুলাউড়া  রেল  শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম জানান, নুরুল ইসলাম সুমনের দায়িত্ব সিলেট স্টেশনে কিন্তু সেখানে দায়িত্ব পালন না করে প্রতিদিন কুলাউড়া এসে স্টেশন ঘোরাঘুরি করে। এবং দৌরাত্ম দেখিয়ে মাদক ব্যবসা ও চাঁদাবাজি করে। প্রতিবাদ করলে ডিআরএম স্যারের ব্যক্তিগত ভিজিটিং কার্ড দেখিয়ে রেলের কর্মচারী এবং প্লাটফর্মের দোকানদারদের হুমকি দিয়ে বলে তাঁর সাথে রেলের বড় কর্তার ভালো সম্পর্ক রয়েছে। কথা না শুনলে চাকুরিচ্যুত ও দোকান উচ্ছেদ করা হবে। সাধারণ কর্মচারী ও প্লাটফর্মে দোকনদাররা ভয়ে কোন কথা বলতে পারেনা। যখন তখন টাকা দাবি করে। না দিলে হুমকি প্রদান করে।

এব্যাপারে জানতে চাইলে কুলাউড়া রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ শ. ম. কামাল হোসাইন বলেন, অভিযোগ পেয়ে নুরুল ইসলাম সুমনকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করি এবং অহেতুক কাউকে হয়রানী না করার জন্য নির্দেশ দেই। তাঁর দায়িত্ব পালন না করার বিষয়টি যাচাই ও ব্যবস্থা গ্রহণের এখতিয়ার সংশ্লিষ্ট দপ্তরের।

Post a Comment

Previous Post Next Post