কেনো মাস্ক, কেনো সাবান?

ডা. মো. সাঈদ এনাম: একটি কাশি দেবার পূর্বে একজন কে বড় করে নিঃশ্বাস নিতে হয়। তারপর সেই বাতাস ধরে রেখে প্রচন্ড শক্তিতে কাশি হয়। ফুসফুসের বাতাসের সাথে সাথে তখন বের হয় ফুসফুসে জমা হওয়া মিউকাস, যা ভাইরাসের সাথে যুদ্ধ করার জন্যে ফুসফুস থেকেই তৈরি হয়।

এক একটা কাশিতে প্রায় ৩০০০ ড্রপলেট (মিউকাসকনা) নির্গত হয়। এই Droplet বা কাশকনা গুলো ঘন্টায় প্রায় ৫০ মাইল বেগে নাক মুখ থেকে নির্গত হয় এবং তা কয়েক ফুট দূরে গিয়ে পড়ে।

হাঁচির ব্যাপারটা আরো ভয়াবহ। হাঁচির মাধ্যমে নাক মুখ থেকে প্রচন্ড বেগে একসাথে প্রায় ৪০ হাজার ড্রপলেট বা জলীয় কনা। এই হাঁচির কনা, কাশকনা বা মিউকাস কনা থেকেও দ্রত গতিতে নির্গত হয়, যা প্রায় ঘন্টায় ২০০ মাইল বেগ। এ যেনো রকেট গতি!

একটা হাঁচি বা কাশির ড্রপলেট এর মাধ্যমে একজন করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী থেকে প্রায় ২০০ মিলিয়ন ( ১ মিলিয়ন =১০ লাখ) ভাইরাস পার্টিক্যাল বাতাসে বা আশে পাশে ছড়িয়ে পড়ে।

আশে পাশে ছড়িয়ে পড়া এই ড্রপলেট এর ভিতর ভাইরাস কয়েক ঘন্টা সজীব থাকে এবং তা সুস্থ দেহের সংস্পর্শে এসে সংক্রমণ করতে পারে।

তবে রোগী যদি যথাযথ নিয়মে মাস্ক পরেন তাহলে তার নাক মূখ থেকে নিঃসৃত এই হাজার হাজার ভাইরাস সমেত ড্রপলেট গুলো সব মাস্কেই আটকা পড়ে। আর রোগীর সামনে থাকা কেউ যদি মাস্ক পরেন তাহলে তার নাক মুখের ভিতর এই ভাইরাস ঢুকার সম্ভাবনা একেবারেই কমে যায়। এজন্য সেবা দানকারীকে মাস্ক গাউন পরতে হয়।

সবচেয়ে আশার বানী হলো, এই ভাইরাস সাবান পানির ছোঁয়া পেলেই মারা যায়। সাবান পানিতে তার সংক্রমণ ক্ষমতা পুরোপুরি বিনষ্ট হয়। কারন সাবানের ফেনায় ভাইরাসের বহিঃআবরন একেবারে চূর্ণ বিচূর্ণ হয়ে যায়। তাই ভাইরাস প্রতিরোধে প্রতি নিয়ত ২০ সেকেন্ড নিয়ে হাত ধূতে হয়।

লেখকঃ ডা. মো. সাঈদ এনাম
সাইকিয়াট্রিস্ট, ডিএমসি কে,৫২।
সহকারী অধ্যাপক
সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ।

Post a Comment

Previous Post Next Post