স্পোর্টস ডেস্কঃ দক্ষিণ আফ্রিকার পচেফস্ট্রুমে গত রোববার অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে শিরোপা জেতে বাংলাদেশ। প্রথমবারের মতো দেশকে বিশ্বকাপ শিরোপা উপহার দেয়া আকবর আলীরা দেশে ফিরেছেন কাল। যুবা ক্রিকেটারদের বীরোচিত সংবর্ধনা দিয়ে বরণ করে নেয় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
বিসিবির এমন বিশাল আয়োজন এবং দেশের মানুষের এত উৎসাহ দেখে বিস্মিত অধিনায়ক আকবর। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘ধারণা করেছিলাম দেশে ফিরলে বড় কিছু হবে। কিন্তু এত বড় কিছু হবে, ভাবতে পারিনি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা কিছু পাওয়ার জন্য বিশ্বকাপ খেলতে যাইনি। আমরা যেটা অর্জন করেছি সেটা আমাদের কাছে অনেক বড় প্রাপ্তি।’
বিকেল ৪টা ৫৫ মিনিটে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী দলকে বহনকারী এমিরেটস এয়ারলাইনসের ফ্লাইটটি অবতরণ করে ঢাকায়। ফুল ছিটিয়ে তাদের বরণ করে নেন বিসিবি কর্মকর্তারা। মিষ্টি মুখ করানো হয় খেলোয়াড়, কোচসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে। প্রত্যেককে পরিয়ে দেয়া হয় ফুলের মালা। দেশে ফিরে ক্রিকেটারদের মুখে ছিল সোনালি হাসি।
লাল-সবুজে সাজানো ‘ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়ন’ লেখা একটি বাসে করে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বিশ্বকাপজয়ী দলকে নিয়ে যাওয়া হয় মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। চোটের জন্য বিশ্বকাপের মাঝপথ থেকে দেশে ফেরা অলরাউন্ডার মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী বিমানবন্দরে যোগ দেন সতীর্থদের সঙ্গে। বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন সমর্থকরা। কয়েকজন ক্রিকেটারের স্বজনরাও ছিলেন সেখানে।
সবার মুখে শুধু বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ও আকবর, আকবর ধ্বনি! বিমানবন্দরের মতো স্টেডিয়াম এলাকায়ও ছিল ভক্তদের উপচে পড়া ভিড়। ব্যানার, ফেস্টুন, জার্সি এবং জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে সোনার ছেলেদের বরণ করে নেয়ার অপেক্ষায় ছিলেন সবাই। স্টেডিয়ামে গোটা দলকে দেয়া হয় লালগালিচা সংবর্ধনা। বাংলাদেশে কোনো দলকে এই প্রথম এ ধরনের সংবর্ধনা দেয়া হল।
পরে বিসিবি কর্তাদের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত এক মিটিং শেষে মাঠে ঢোকেন খেলোয়াড়রা। সেখানেও ছিল লালগালিচা। গ্যালারির গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডের নিচের অংশ ছিল ভক্ত-সমর্থকে পূর্ণ। বেশ কয়েকজন ক্রিকেটারের পরিবারের সদস্যরা এসেছিলেন মাঠে। মাঠে বানানো অস্থায়ী মঞ্চে বিসিবি সভাপতিকে নিয়ে ‘বিশ্বচ্যাম্পিয়ন’ লেখা কেক কাটেন ক্রিকেটাররা। অধিনায়ক আকবরের বাবা মোহাম্মদ মোস্তফাকে নিজের হাতে কেক খাইয়ে দেন বিসিবি সভাপতি।
সংবাদ সম্মেলনের পর নৈশভোজে অংশ নেয় দল। দীর্ঘ সময় দেশের বাইরে ছিলেন আকবর আলীরা। এখন বাড়ি ফেরার পালা। আজ বিভিন্ন সময়ে ক্রিকেটাররা গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে যাত্রা করবেন। অবশ্য যুব দলের ক্রিকেটার, কোচদের তাদের স্বজনদের কাছে ফেরার ব্যবস্থা করে রেখেছে গেম ডেভেলপমেন্ট বিভাগ। সকাল থেকে বিমানে ও বাসে করে পরিবারের কাছে ফিরবেন বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। অনেকের স্বজনেরা মঙ্গলবার ঢাকা এসেছেন গর্বিত বীরদের নিতে।