মালয়েশিয়া সরকারের সেকেন্ড হোম প্রকল্পের আওতায় ফ্ল্যাট কেনেন সম্রাট


অনলাইন ডেস্কঃ ক্যাসিনো-কান্ডে সম্রাটের সঙ্গে নেপথ্যে জড়িত ছিলেন রাঘববোয়ালরাও। দীর্ঘদিন ধরে তারা ক্যাসিনোর নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। ইতিমধ্যে সেই রাঘববোয়ালদের চিহ্নিত করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের শীর্ষ নেতাদের নামও বেরিয়ে এসেছে। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন রয়েছেন, যারা জি কে শামীমের টেন্ডারবাজির সঙ্গেও জড়িত। খবর বাংলাদেশ প্রতিদিনের।

ক্যাসিনোর সঙ্গে জড়িত ৪৩ জনের নামের একটি তালিকা দুদকের হাতে এসে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখত। অনুসন্ধানে প্রমাণ পেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের মামলা হবে।

সিআইডিসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংকের বাংলাদেশ ফিনানশিয়াল ইনটেলিজেন্স ইউনিটের কাছ থেকে এদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। প্রথম দিকে গণমাধ্যমে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জি কে শামীম ও সম্রাটসহ অন্তত ২০ জনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করলেও এখন রাজনৈতিক নেতা, ঠিকাদার, সরকারি কর্মকর্তাদেরও সম্পৃক্ততা বেরিয়ে আসছে। র‌্যাব তাদের বিষয়গুলো যাচাই-বাছাই করছে। এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেও জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তারা।
ক্যাসিনো অভিযানে যাদের কাছ থেকে বিপুল অর্থ-সম্পদ ও টাকা-পয়সা পাওয়া গেছে তাদের বিষয়টি অনুসন্ধান করছে দুদক ও সিআইডি। ক্যাসিনো-কাণ্ড ছাড়াও অর্থ পাচার করে মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কারা বাড়ি করেছেন তাদের বিষয়টিও অনুসন্ধানে আনা হয়েছে। 

এ বিষয়ে সিআইডির ডিআইজি (অর্গানাইজড ক্রাইম) ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘আমরা কয়েকটি সংস্থার কাছে জি কে শামীম ও খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার সম্পদের তথ্য, এর আগের উৎস, স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের তথ্য চেয়ে চিঠি দিয়েছি। একই সঙ্গে তার কাছ থেকে আরও কিছু মানুষের নাম পাওয়া গেছে, যারা তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিত। আমরা তাদের বিষয়েও তদন্ত করছি।’

১৮ সেপ্টেম্বর ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু করে র‌্যাব। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২৯ সেপ্টেম্বর মাঠে নামে দুদক। সংস্থাটি ক্যাসিনো ব্যবসায় জড়িত ৪৩ জনের দেশে-বিদেশে বিপুল পরিমাণ সম্পদের তথ্য পেয়েছে। সূত্রে জানা গেছে, এরই মধ্যে মালয়েশিয়ার আমপাং তেয়ারাকুতে যুবলীগ নেতা ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের ফ্ল্যাট থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। মালয়েশিয়া সরকারের সেকেন্ড হোম প্রকল্পের আওতায় ফ্ল্যাট কেনেন সম্রাট। এ ছাড়া মালয়েশিয়ার বিভিন্ন ব্যাংকেও তার লেনদেনের তথ্য রয়েছে। 

ক্যাসিনো বন্ধে অভিযান শুরুর পর এ ব্যবসায় জড়িত যুবলীগসহ সরকারদলীয় অনেক নেতার নাম আসতে থাকে। গ্রেফতার করা হয় যুবলীগ নেতা ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটসহ বেশ কয়েকজনকে। অভিযানকালে ক্যাসিনোয় জড়িতদের বাসায় পাওয়া যায় বিপুল পরিমাণ অর্থ। এসব কর্মকান্ডে জড়িত তালিকাভুক্ত ৪৩ জনকে আইনের আওতায় আনার বিষয়ে সরকারের উচ্চপর্যায় থেকেও সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে। তাদের অনেকের ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়েছে। 

গত পাঁচ বছরে কী পরিমাণ লেনদেন হয়েছে সেই তথ্য চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠিও দিয়েছে দুদক। এছাড়া এনবিআর, ভূমি অফিস, সাব-রেজিস্ট্রি অফিস, রিহ্যাবসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দফতরে সংশ্লিষ্টদের অর্থ-সম্পদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের জন্য চিঠি দিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও দুদক। 

চিঠিতে সাবেক ও বর্তমান কয়েকজন এমপি, আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের বিষয়েও তথ্য চাওয়া হয়েছে। তাদের নামে মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোমের তালিকাও আছে বলে জানা গেছে। শিগগিরই তাদের অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান শুরু হবে।

Post a Comment

Previous Post Next Post