এক টাকা খেলাপি ঋণ থাকলেই সিআইবিতে


অনলাইন ডেস্কঃ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে নেওয়া ঋণের এক টাকাও খেলাপি থাকলে ওই তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘ঋণ তথ্য ব্যুরো’ বা সিআইবিতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এর ফলে ওই গ্রাহক আর কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ পাবেন না। একই সঙ্গে ওই গ্রাহককে খেলাপি হিসেবে গণ্য করায় তিনি জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেওয়া, ব্যাংকের পরিচালক হওয়াসহ নানা ধরনের সামাজিক সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করতে পারবেন না।

গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো থেকে এক সার্কুলার জারি করে এক টাকা খেলাপি ঋণ থাকলেও ওই গ্রাহককে খেলাপি দেখিয়ে তাঁর তথ্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পাঠাতে বলা হয়েছে। সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধান নির্বাহীদের উদ্দেশ্যে পাঠানো ওই সার্কুলারে এ তথ্য নিয়মিতভাবে পাঠাতে বলা হয়েছে।

দেশের ৫৭টি ব্যাংক ও ৩৪টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ঋণগ্রহীতার তথ্য নিয়ে সিআইবিতে সংরক্ষণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তা ছাড়া বাণিজ্যিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে গ্রাহকের সিআইবি সনদ বাধ্যতামূলক। এত দিন ক্রেডিট কার্ডের ক্ষেত্রে ১০ হাজার টাকা এবং অন্যান্য ঋণের ক্ষেত্রে ৫০ হাজার টাকার বেশি খেলাপি থাকলে ওই ঋণগ্রহীতার তথ্য সিআইবিতে থাকত। এখন থেকে সেখানে এক টাকার খেলাপিদের তথ্যও থাকবে। অর্থাৎ যেকোনো অঙ্কের খেলাপি হলেই তিনি খেলাপি বলে গণ্য হবেন এবং নতুন করে ঋণ পাবেন না।

সার্কুলারে বলা হয়েছে, ব্যাংক খাতের ঋণ শৃঙ্খলা জোরদার করতে সিআইবি ডাটা বেইসে সব ধরনের ঋণতথ্য অন্তর্ভুক্ত হওয়া প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে সিআইবিতে ঋণতথ্যের নিম্নসীমা নির্ধারণ করা হলো এক টাকা। এখন থেকে এক টাকা বা তার চেয়ে বেশি বকেয়া ঋণের তথ্য সিআইবি অনলাইন সিস্টেমে মাসিক ভিত্তিতে আপডেট করতে হবে। মার্চ থেকে এসংক্রান্ত তথ্য দিতে হবে। মার্চ মাসের তথ্য পাঠাতে একটু বেশি সময় দেওয়া হয়েছে। মার্চের তথ্য দিতে হবে আগামী ১০ মের মধ্যে। এর পর থেকে প্রতি মাসের তথ্য আপলোড করতে হবে পরবর্তী মাসের ২০ তারিখের মধ্যে।

বন্ধকি সম্পত্তির আলাদা তথ্যভাণ্ডার : অনেক সময় একই সম্পত্তি একাধিক ব্যক্তি বন্ধক রেখে ঋণ নেন বা একাধিক ব্যাংকে বন্ধক রেখে ঋণ জালিয়াতির চেষ্টা হয়। এ ধরনের জালিয়াতি বন্ধে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে নেওয়া ঋণের বিপরীতে রাখা বন্ধকি সম্পত্তির তথ্য সংরক্ষণের জন্য একটি কেন্দ্রীয় তথ্যভাণ্ডার করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো থেকে জারি করা আলাদা এক সার্কুলারে বলা হয়েছে, ঋণের বিপরীতে জামানতসংক্রান্ত প্রতারণা ও দুর্নীতি রোধকল্পে বন্ধকি সম্পত্তির তথ্যভাণ্ডার করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

প্রাথমিকভাবে প্রতি ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে এই তথ্যভাণ্ডারে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জামানতি ভূমি, দালান, ফ্ল্যাট এবং যন্ত্রপাতির তথ্য অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে ঋণগ্রহীতার পরিচিতিমূলক তথ্যের পাশাপাশি জামানতি সম্পত্তির মালিক এবং সম্পত্তির বিষয়ে তথ্য দিতে হবে। চলতি বছরের মার্চ ত্রৈমাসিক থেকে তথ্য পাঠাতে বলা হয়েছে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে। প্রথম ত্রৈমাসিকের তথ্য আগামী ৩১ মের মধ্যে পাঠাতে হবে। জুন থেকে মাসিক ভিত্তিতে তথ্য পাঠাতে হবে। প্রতি মাসের পরবর্তী মাসের ২০ তারিখের মধ্যে তথ্য আপডেট করতে হবে। সুত্রঃ কালের কন্ঠ

Post a Comment

Previous Post Next Post