অনলাইন ডেস্কঃ আগামী ৩১শে জানুয়ারি পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে সর্বোচ্চ ২০ লাখ টন খাদশস্য প্রয়োজন। যার পুরোটাই ঘাটতি বলে মন্ত্রিসভাকে জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম।
অপরদিকে মন্ত্রিসভার বৈঠকে দেশের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বন্ধ হয়ে থাকা সব ব্রিজ-কালভার্ট দ্রুত সচল করার নির্দেশ দিয়েছেন।
গতকাল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ দুই বিষয়ে অনির্ধারিত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। খাদ্য পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা উঠলে খাদ্যমন্ত্রী দেশে খাদ্য মজুদের বর্ণনা দেন।
মন্ত্রিসভা বৈঠক শেষে সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের, জানুয়ারির মধ্যে দেশের খাদ্য ঘাটতি মেটাতে কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ড থেকে ১৫ লাখ টন চাল এবং রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে ৫ লাখ টন গম আমদানি করা হবে বলে বৈঠকে খাদ্যমন্ত্রী জানান।
তিনি বলেন, সভার শুরুতে খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল চাল আমদানির বিষয়ে সমপ্রতি কম্বোডিয়া সফর সম্পর্কে মন্ত্রিসভাকে অবহিত করেন।
এ সময় তারা জানান, আগামী ৫ বছর মেয়াদে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টন চাল আমদানির জন্য কম্বোডিয়ার সঙ্গে জি-টু-জি পদ্ধতিতে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। একাধিক সিনিয়র মন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, এজেন্ডা নিয়ে আলোচনার সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানতে চান- দেশে খাদ্য ঘাটতি কত? তখন খাদ্যমন্ত্রী জানান, আগামী ৩১শে জানুয়ারি পর্যন্ত দেশে খাদ্য ঘাটতি ২০ লাখ টন হবে। তখন প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাহলে এই ২০ লাখ টনের বেশি খাদ্যশস্য যেন আমদানি না করা হয়। কারণ প্রয়োজনের বেশি আমদানি করলে দেশের কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
চুক্তি অনুযায়ী কবে নাগাদ চাল আসবে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে শফিউল আলম বলেন, ইতিমধ্যে চাল আমদানির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এদিকে মন্ত্রিসভা বৈঠকে বন্যার কারণে জমে থাকা পানি দ্রুত নিষ্কাশন করতে উত্তরাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যেসব ব্রিজ ও কালভার্ট বন্ধ আছে সেগুলো খুলে দেয়ার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকদের কার্যকর ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে নির্দেশ দেন তিনি।
উত্তরাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনাকালে কয়েকজন মন্ত্রী বলেন, দেশের অনেক ব্রিজ ও কালভার্টের কারণে বন্যার পানি দ্রুত নিষ্কাশন হচ্ছে না। এছাড়া ছোটখাট অনেক নদীতে বাঁধ দেয়া হয়েছে। অনেকে কালভার্ট-ব্রিজের মুখে দেয়াল দিয়ে মাছ চাষ করছেন। অনেকে নিজের সুবিধার জন্য ব্রিজ ও কালভার্টের নিচে মাটি দিয়ে ভরাট করে ফেলেছেন। ফলে বন্যার পানি দ্রুত নিষ্কাশন হতে পারছে না। এতে অনেক স্থানে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। মন্ত্রীদের এমন আলোচনার পর প্রত্যেকটি ব্রিজ ও কালভার্ট দিয়ে পানি যাতে দ্রুত নিষ্কাশন হতে পারে সেই ব্যবস্থা নিতে ডিসিদের কার্যকর পদক্ষেপ নিতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।
মন্ত্রিসভায় অনির্ধারিত আলোচনায় কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, পর্যাপ্ত পরিমাণে আমন ধানের বীজ মজুদ আছে। এছাড়া আমনের চারাও পর্যাপ্ত পরিমাণে আছে। বন্যার পানি নেমে গেলে কৃষকরা আবার ধান রোপণ করতে পারবেন। সুত্রঃ মানবজমিন