অনলাইন ডেস্কঃ
সিলেটে আরো তিন/চারদিন বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টি ও অব্যাহত
পাহাড়ি ঢলের কারণে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
রোববারও সিলেটে নদনদীগুলোর পানি বেড়েছে। এ নতুন করে তলিয়ে গেছে আরো
কয়েকটি এলাকা।
সিলেট আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী জানিয়েছেন, ৩ থেকে
৭ জুলাই পর্যন্ত সিলেটে প্রবল বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে টিলা ধসেরও শঙ্কা রয়েছে বলে জানান তিনি।
পানি
উন্নয়ন বোর্ডের সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, বরাক
বেসিনে বৃষ্টিপাত হওয়ায় আরও দুই দিন পানিবৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। বিশেষ করে
কুশিয়ারার পানি আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।
পানি
উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, উজানে ভারতের মেঘালয় পাহাড়ে টানা বর্ষণের কারণে
সিলেটের কুশিয়ারা ও সুরমা নদীর পানি বাড়তে থাকে। বর্তমানে দু’টি নদীর সবকটি
পয়েন্টে বিপদসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
এর
মধ্যে কুশিয়ারা নদীর পানি ঢুকে জেলার ফেঞ্চুগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, বালাগঞ্জ,
ওসমানীনগর, গোলাপগঞ্জ ও জকিগঞ্জ উপজেলায় বন্যা দেখা দেয়। উজানে টানা বর্ষণ
হওয়ায় রোববার বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে।
সিলেট
পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, রোববার দুপুর পর্যন্ত
কুশিয়ারা নদীর পানি অমলশীদ পয়েন্টে ৮৫ সেমি , শেওলা পয়েন্টে ৭৩ সেন্টিমিটার
এবং শেরপুর পয়েন্টে ২৪ সেন্টিমিটার বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এছাড়া সুরমা নদীর পানি কানাইঘাটে বিপদসীমার ৫৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে
প্রবাহিত হচ্ছে।
অকাল
বন্যায় বোরো ফসলহানির রেশ না কাটতেই এবারের বন্যায় আবার বিপাকে পড়েছেন
সিলেট অঞ্চলের কৃষকরা। এবার বন্যায় তলিয়ে যাচ্ছে আউশ ধান। এ পর্যন্ত সিলেট
জেলায় ৩ হাজার হেক্টর জমির ধান তলিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন সিলেটের জেলা
প্রশাসক রাহাত আনোয়ার।
রোববার সকালে বন্যা মোকাবেলায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ তথ্য জানান তিনি।
জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, বন্যায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন সিলেটের ৬ উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ।
বন্যার
কারণে রোববার জেলার ১৬১টি প্রাথমিক ও ১৩টি মাধ্যমিক স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা
হয়। এছাড়া ৬ উপজেলায় ৯টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে এ
পর্যন্ত ৮৯টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে।
জেলা
প্রশাসক রাহাত আনোয়ার জানান, বন্যা কবলিত ৬ উপজেলায় ইতিমধ্যে ১২৮ মেট্রিক
টন চাল ও নগদ প্রায় ২ লাখ ৭৭ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়া প্রতিটি
উপজেলায় মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।