ঈদে মাধবকুন্ডে বেরাতে আসা পর্যটকদের দুর্ভোগ : পর্যটন কেন্দ্র খুলার দাবীতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন

স্টাফ রিপোর্টার: মৌলভীবাজারের বড়লেখার মাধবকু- জলপ্রপাতে গিয়ে তালাবদ্ধ ফটক থেকে ঈদ ও পরেদিন নিরাশ হয়ে ফিরে গেলেন ৫ সহস্রাধিক পর্যটক। দুর-দুরন্তের পর্যটক ভেতরে প্রবেশ করতে না পেরে ইকোপার্কের টিকেট কাউন্টারে ভাংচুর চালিয়েছে। দেশের অন্যতম এ পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেয়ার দাবীতে আগত ভ্রমন পিপাসুরা স্থানীয় ব্যবসায়ীদের নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসুচি পালন করেছে। এসময় রোষানলে পড়ার আশংকায় ইকোপার্ক এলাকায় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্তব্যরত পর্যটক পুলিশও সটকে পড়ে।

উল্লেখ্য গত দুই সপ্তাহ আগের ভারি বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে জলপ্রপাতের রাস্তায় ফাটল, যাতায়াতের সিড়ির নিচের মাটি দেবে যাওয়ায় মারাত্মক ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। অনাকাঙ্খিত দুর্ঘটনা এড়াতে ২২ জুন থেকে মাধবকু-ে পর্যটক প্রবেশ সাময়িক বন্ধ করে দেয় স্থানীয় প্রশাসন। এরপর থেকে নিস্তব্ধ হয়ে পড়ে দেশের অন্যতম পর্যটন এলাকা মাধবকু-। কিন্তু সাময়িক বন্ধের বিষয়টি অনেকের জানা না থাকায় ঈদ উপলক্ষে অনেক পর্যটক ছুটে যাচ্ছেন মাধবকু-ে। ভেতরে প্রবেশ করতে না পেরে অনেকে প্রধান ফটকের সম্মুখে অবস্থান নিয়ে ফিরতে হচ্ছে তাদের।

ঈদের দিন থেকে এ পর্যন্ত মাধবকু- ইকোপার্কের প্রধান ফটক তালাবদ্ধ রয়েছে। জলপ্রপাত দেখার জন্য ভেতরে প্রবেশ করতে শত শত পর্যটক ভিড় করেন। এ নিয়ে পর্যটকের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পর্যটক পুলিশে হিমশিম খেতে হয়।
ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে সিলেট থেকে আগত কলেজ শিক্ষার্থী শামীম আহমদ, জুনেদ আহমদ, আকাশ আহমদ, আব্দুস সামাদ সহ আরো কয়েকজন অভিযোগ করেন সংস্কার কাজের দুহাই দিয়ে পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ করে দেয়ার কোন যুক্তি ছিল না। বনবিভাগের এ মনগড়া সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে পর্যটকের জন্য মাধবকু-ের তালা খুলে দেয়ার দাবী জানান। এ দাবীতে স্থানীয় ব্যসবায়ীদের নিয়ে আগত দর্শনার্থীরা মানববন্ধন কর্মসুচি পালন করেছে।
বনবিভাগের স্থানীয় রেঞ্জ কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ঈদ উপলক্ষে শ্রমিক না থাকায় সংস্কার কাজ বন্ধ রয়েছে। কাজ শেষে অভ্যন্তরীণ রাস্তা পর্যটকের চলাচলের উপযোগী করেই ইকোপার্কের গেইট খুলে দেয়া হবে।
ব্যবসায়ীরা বলেন, বনবিভাগ ইকোপার্ক থেকে বছরে ৩০-৩৫ লাখ টাকা রাজস্ব আয় করছে। ঈদের আগে পরে ১০-১৫ দিন হাজার হাজার পর্যটক আনন্দ উপভোগে এখানে প্রকৃতির সান্নিধ্যে ছুটে আসেন। ১৫ দিন আগের বর্ষণে রাস্তায় সামান্য ফাটল আর অল্প দেবে যাওয়া মেরামতে বনভিবাগ চরম উদাসীন। দেশের দুরদুরান্তের পর্যটকের দুর্ভোগের কথা তারা মোটেও চিন্তা করেনি। কোন পূর্ব প্রস্ততি নেয়নি। বর্ষাকালে অতীতেও মাধবকু-ের রাস্তা-ঘাট বিধস্ত হয়েছে। কিন্তু ইকোপার্ক বন্ধ করার ঘটনা ঘটেনি। নজিরবিহীন এ ঘটনা মাধবকু- ধংসের ষড়যন্ত্র বলে পর্যটক ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা দাবী করেন।
মাধবকু- পর্যটন পুলিশের ইনচার্জ এসআই জাহাঙ্গির আলম জানান, গেইট বন্ধ করে দেয়ায় গত ২২ জুন থেকে পর্যটকরা নানা বিশৃঙ্খলা ও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাচ্ছে। ঈদের দিন ব্যাপক পর্যটক আসেন, কিন্ত কর্তৃপক্ষের অনুমতি না থাকায় পুলিশ তাদরেকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়নি। নিজেরও কষ্ট লাগছে অনেক দুর থেকে টাকা খরচ করে আসার পর গেইট থেকেই তাদেরকে ফিরিয়ে দিতে হচ্ছে।

Post a Comment

Previous Post Next Post