স্পোর্টস ডেস্কঃ
লঙ্কানদের হয়ে একাই খেললেন চামারি আতাপাত্তু। আইসিসি নারী বিশ্বকাপ
ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তার ব্যাটেই সম্মান রক্ষা হলো শ্রীলঙ্কার।
দলের রান ২৫৭। এর মধ্যেই তারই ১৭৮। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোরটি ২৪ রানের। মোট
রানের ৭০ শতাংশ করে দলকে লড়াইয়ের পুঁজিই গড়ে দেননি তিনি, গড়েছেন নতুন
মাইলফলক।
নারী
ক্রিকেটারদের ইতিহাসে এটা তৃতীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের স্কোর আর
বিশ্বকাপে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। আর আতাপাত্তুর ওই ইনিংসটি অবশ্যই শ্রীলঙ্কার
ইতিহাসের সর্বোচ্চ।
ব্রিস্টলের
কাউন্টি গ্রাউন্ডে বৃহস্পতিবার টস হেরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ব্যাট করতে
নামে শ্রীলঙ্কা নারী দল। দলের স্কোরবোর্ডে কোনো রান যোগ না হতেই আউট ওপেনার
নিপুনি হানসিকা। এরপর মাঠে নামেন আতাপাত্তু। আরেক ওপেনার চামারি
পলগামপোলার সঙ্গে গড়েন ৪৯ রানের জুটি। যাতে আতাপাত্তুরই অবদান ৪৩ রান। তবে
ওই জুটিতে প্রথম ধাক্কাটা সামলানো গেছে।
পলগামপোলার
আউটের পর একে একে উইকেট পতনের মিছিলে যোগ দিতে থাকেন টপ অর্ডারের
ব্যাটাররা। চেয়ে চেয়ে দলের ধ্বংসযজ্ঞ দেখেন আতাপাত্তু। নিজেই দলের দায়িত্ব
কাঁধে তুলে নিলেন। গড়লেন দেশের হয়ে নতুন ইতিহাস। মাঝে পঞ্চম উইকেটে শশিকালা
সিরিবর্ধনের সাথে ৫২ রানের জুটি হয়েছে। সপ্তম উইকেটে সঙ্গ পান ইশানি
লকুসুরাঙ্গির। তার সাথে গড়েন ৬০ রানের জুটি।
শেষ
পর্যন্ত ১৭৮ রান করে অপরাজিত থাকেন আতাপাত্তু। শ্রীলঙ্কার ইতিহাসের সবচেয়ে
বড় ব্যক্তিগত ইনিংসটি খেলতে ১৪৩ বল সামলেছেন। স্ট্রাইক রেট ১২৪.৪৭। ২২টি
চার ও ৬টি ছক্কার সাহায্যে নিজের ইনিংস সাজান এ ব্যাটার। বর্তমান বিশ্ব
চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দারুণ চাপে খেলেছেন বলে আতাপাত্তুর এই
ইনিংসে মহাত্ম অনেক বেড়েছে।
এবারের
বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচেই মাঠে নেমেছিল শ্রীলঙ্কা। সে ম্যাচে
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারে তারা। সে ম্যাচেও দলের
পক্ষে সর্বোচ্চ রান করেন আতাপাত্তু। ৫৩ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি।
তবে
শুধু এ টুর্নামেন্টেই নয়, দীর্ঘদিন থেকে শ্রীলঙ্কা নারী দলের প্রাণভোমরাই
২৭ বছরের আতাপাত্তু। বাঁহাতি এই ব্যাটার ৬১টি ম্যাচ খেলে দেশের হয়ে
সর্বোচ্চ ১৯০৬ রান করেছেন। ১৯৯৭ সাল থেকে আন্তর্জাতিক ওয়ানডে খেলছে
শ্রীলঙ্কা। দেশটির হয়ে এখন পর্যন্ত সেঞ্চুরি মোটে তিনটি। আর এর প্রতিটি
আতাপাত্তুর। দেশের হয়ে সর্বাধিক ১২টি হাফসেঞ্চুরিও তার।
উল্লেখ্য,
নারী ক্রিকেটে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের স্কোরটি অস্ট্রেলিয়ার সাবেক
অধিনায়ক ওপেনার বেলিন্দা ক্লার্কের। ১৯৯৭ সালের ভারত বিশ্বকাপে ডেনমার্কের
বিপক্ষে ২২৯ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিলেন তিনি। পুরুষ-নারীর সব ধরণের
আন্তর্জাতিক সীমিত ওভারের ক্রিকেটের হিসেবে ওটাই প্রথম ওয়ানডে ডাবল
সেঞ্চুরি। নারীদের ক্রিকেটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোরটি ভারতের
দিপ্তি শর্মার। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ১৮৮ রান করেছিলেন তিনি। ওই দুজনার
পরই উঠে এসেছে আতাপাত্তুর নাম।