বিশেষ প্রতিনিধিঃ গত
দু’দিনের টানা বৃষ্টিতে হাকালুকি হাওরের পানি এখন অনেকটাই বিশুদ্ধ। ধান
পচা থেকে সৃষ্ট অ্যামোনিয়া গ্যাসের প্রভাব কমে গেছে। এই হাওরে মরে যাওয়া ২৫
টন মাছের ঘাটতি পূরণে ১৮ লাখ পোনা অবমুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা
মৎস্য কর্মকর্তারা।
শনিবার বিকেলে জেলা মৎস্য অধিদফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে হাওরের বর্তমান অবস্থা নিয়ে এক পর্যালোচনা সভায় এ তথ্য জানানো হয়।
পর্যালোচনা
সভায় মৎস্য কর্মকর্তা জানান, হাকালুকি হাওরের মৌলভীবাজার অংশের কুলাউড়া,
জুড়ী ও বড়লেখার বিলগুলোতে অ্যামোনিয়া গ্যাসের প্রভাবে ২৫ টন মাছ মারা গেছে
বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ হাওরে বছরে মাছের উৎপাদন ১৪ হাজার টন। আপদকালে মরে
যাওয়া মাছের ঘাটতি পুরণে বিল নার্সারির মাধ্যমে ১৮ লাখ পোনা উৎপাদন করে
আগামী জুনের মধ্যে অবমুক্ত করা হবে। এরই মধ্যে আটটি বিল নার্সারিতে পোনা
মাছ চাষ করা হচ্ছে।
পর্যালোচনা সভায় আপদকালীন সময়ে হাওরে ধারণ করা বিভিন্ন কার্যক্রম উপস্থাপন করেন কুলাউড়া মৎস্য কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ।
সভায়
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আ ক ম শফিকুজ-উজ-জামান বলেন, গত ১৫ এপ্রিল রাতে
প্রচন্ড ঝড়ের পরদিন থেকে হাকালুকি হাওরে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ মরতে শুরু
করে। এরপর জেলা মৎস্য বিভাগ মাছ মরার কারণ এবং তা প্রতিরোধে অনুসন্ধান শুরু
করে। হাওরের পানি বিশুদ্ধকরণে তাৎক্ষণিকভাবে ১৫ টন চুন ও ওষুধ ছিটানো হয়।
তিনি
আরও জানান, গত ২০ এপ্রিল মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব
সৈয়দ মেহেদী হাসান, মৎস্য অধিদফতরের উপপরিচালক মো. রমজান আলী, মৎস্য গবেষণা
ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মাসুদ হাকালুকি হাওর সরেজমিন
পরিদর্শন করেন। তারা হাওরের মাগুরা, ধনিয়া, গৌড়কুঁড়ি, চকিয়া, চাতলাসহ
বিভিন্ন বিলের পানি পরীক্ষা করে দিকনির্দেশনা দেন।
এদিকে
দুইদিনের টানা বর্ষণে দূষণে আক্রান্ত পানি কুশিয়ারা নদীতে বেরিয়ে গেছে।
শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক হারুনুর রশীদ জানান, দুইদিনে ২০৬
মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। অতিমাত্রায় বৃষ্টি হওয়ায় হাওরের
পানি শোধনে মহৌষধের কাজ করেছে।