শেষ হলো শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’

শেষ হলো শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’
অনলাইন ডেস্কঃ শেষ হল সেনাবাহিনীর প্যারাকমান্ডোদের অভিযান অপারেশন টোয়াইলাইট। সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকায় আতিয়া মহলে এক জঙ্গি আস্তানায় চালানো হয় এ অভিযান।

মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) রাত ৮টায় জালালাবাদ সেনানিবাসে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ কথা জানান সামরিক গোয়েন্দা পরিদপ্তর এর প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফখরুল আহসান।

তিনি বলেন, জঙ্গি দমনে এ অভিযান মাইলফলক হিসেবে থাকবে। সীতাকুন্ডের অভিযানে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে, সিলেটের ২৭ নং ওয়ার্ডের শিববাড়ি-পাঠানপাড়া সড়কের পাশে অবস্থিত কোন এক বাড়িতে জঙ্গিরা লুকিয়ে আছে। ২৪ মার্চ রাত আনুমানিক দেড়টার সময় এলাকাটি ঘিরে ফেলা হয়। রাত আনুমানিক সাড়ে ৪টায় তারা নিশ্চিত হন, আতিয়া মহল নামক বাড়িটির নিচতলায় জঙ্গিরা অবস্থান করছে। অভিযান পরিচালনাকারী পুলিশ সদস্যরা সাথে সাথে আতিয়া মহলের নিচতলার ছয়টি ফ্ল্যাট ও কলাপসিবল গেট বন্ধ করে দেন। ঘটনার সময় বাসার ৩০টি ফ্ল্যাটের মধ্যে ২৮টি ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা উপস্থিত ছিলেন। জঙ্গিরা পুলিশের উপস্থিতি বুঝতে পেরে তাদেরকে লক্ষ্য করে গ্রেনেড ছুঁড়ে মারে।

অপারেশন সম্পর্কে তিনি বলেন, অপারেশনে ২টি ধাপ নির্ধারণ করা হয়। প্রথম ধাপে ছিল ভবনের বাসিন্দাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও জঙ্গিদের নির্মুল করা। অপারেশনের প্রথম পর্ব ছিল সবচেয়ে ঝুকিপূর্ণ। কমান্ডোরা তাঁদের জীবন বাজি রেখে অত্যন্ত সাহসিকতার সাথে অভিনব কৌশল ২৫ মার্চ আনুমানি ১টার দিকে ৭৮ জনকে উদ্ধার করে তাঁদের উদ্ধার করেন। বৈরি আবহাওয়া অভিযান সফলভাবে শেষ হওয়ার পেছনে নিয়ামক হিসেবে কাজ করে।

উদ্ধারকাজ প্রসংগে তিনি বলেন, পুরো ভবন থেকে উদ্ধারের মধ্যে নিচতলা থেকে উদ্ধারের কাজ ছিল সবচেয়ে ঝুকিপূর্ণ। কমান্ডো সদস্যরা অত্যন্ত সাহসিকতার সাথে অভিনব পন্থা অবলম্বন করে নিচতলার সকল বাসিন্দাদের অত্যন্ত নিরাপদে সরিয়ে আনেন।

এরপর দ্বিতীয় পর্বে জঙ্গিদের নির্মুলের কাজ শুরু হয়। তিনদিন একটানা বিভিন্ন কৌশল অবলম্বনের মাধ্যমে ২৭ মার্চ বিকেলের মধ্যে দুটি লাশ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

পুরো অপারেশন পরিচালনায় পুলিশ, র‍্যাব, সোয়াট, ফায়ার সার্ভিস, বিভিন্ন সেবা প্রদানকারী সংস্থা, স্থানীয় প্রশাসনসহ এলাকাবাসী যে সহায়তা প্রদান করেছেন তার জন্যে আমরা কৃতজ্ঞ। অপারেশন টোয়াইলাইট যে কোন ক্রাইসিস মোকাবেলায় সামরিক ও বেসামরিক প্রশাসনের সমন্বিত প্রচেষ্টার একটি মাইলফলক হিসেবে থাকবে বলে সেনাবাহিনী বিশ্বাস করে।

অপারেশন চলাকালীন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার ভূমিকা ও পেশাদারিত্ব অপারেশন পরিচালনায় সহায়তা করেছে বলেও তিনি জানান।

Post a Comment

Previous Post Next Post