ফতেপুরে নিহত ‘জঙ্গিরা’ একই পরিবারের


অনলাইন ডেস্ক:  মৌলভীবাজার সদর উপজেলার ফতেপুরে (এলাকাটি নাসিরপুর নামেও পরিচিত) ‘জঙ্গি আস্তানা’য় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ‘অপারেশন হিটব্যাকে’ নিহত ‘জঙ্গিরা’ একই পরিবারের সদস্য বলে ধারণা করছে অভিযানের দায়িত্বে থাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে শেষ হয়েছে এই অভিযান। এতে সাত থেকে আটজন নিহত হয়েছে বলে সদর উপজেলার খলিলপুর ইউনিয়ন কমপ্লেক্সে এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম।

মৌলভীবাজার শহরের বড়হাট ও সদর উপজেলার ফতেপুর এলাকায় গত বুধবার থেকে ঘেরাও করে রাখেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এই বাড়ি দুটির মালিক লন্ডনপ্রবাসী সাইফুর রহমান।

ফতেপুরের বাড়ির তত্ত্বাবধায়কের বরাত দিয়ে মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘ওই বাড়ির তত্ত্বাবধায়কের তথ্যমতে, এখানে থাকা জঙ্গিরা সবাই একই পরিবারের সদস্য। তবে সেই তথ্য আমরা যাচাই-বাছাই করতে পরিনি। আমরা একটি সূত্র ধরে কাজ করছিলাম। নিহত জঙ্গিরা সবাই নব্য  জেএমবির সদস্য এটা মোটামুটি নিশ্চিত।’

মনিরুল বলেন, ‘বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে অভিযান শেষ হয়েছে। আমরা ভিতরে বেশকিছু লাশ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকতে দেখেছি। সেগুলো একত্রিত করলে পুরো সংখ্যাটি পাওয়া যাবে। তবে, তা সাত-আটজনের কম হবে না। নারী-পুরুষ ও অপরিণত বয়সীর দেহ থাকতে পারে। এরা আত্মহনন করে থাকতে পারে।’

‘আমরা বাড়ির বিভিন্ন কক্ষে তাদের লাশ দেখেছি। এদের লাশ স্বাভাবিকভাবে দেখলে কেউ চিনবে না। কারো মাথা হয়তো কয়েক টুকরো হয়ে গেছে। হাতের কোনো চিহ্ন নেই। শরীর দুমড়েমুচড়ে গেছে। এভাবে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন লাশ পড়ে আছে। দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল’, যোগ করেন মনিরুল ইসলাম।

গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মৌলভীবাজারের দুটি জঙ্গি আস্তানার মধ্যে ফতেপুরে ‘অপারেশন হিট ব্যাক’ নামে সোয়াটের এই অভিযান শুরু হয়। রাতে অভিযান বন্ধ করে দিয়ে আজ ভোর থেকে শুরু করার কথা ছিল। কিন্তু দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে তা শুরু হয়নি। সকাল সাড়ে ৭টায় সোয়াটের একটি দল ফতেপুরের জঙ্গি আস্তানায় পৌঁছায়। সকাল ৮টার দিকে বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিট ফতেপুরের জঙ্গি আস্তানার বাড়িতে পৌঁছায়। পরে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে অভিযান শুরু হয়।

অভিযান শুরুর পর দুপুর ১২টার কিছু আগে থেকে টানা গুলির শব্দ শোনা যায়। এ সময় বেশ কয়েক দফায় ঘটনাস্থলে থেকে থেমে থেমে গুলি চলে। বেলা ১টা ৪ মিনিটে ফতেপুরের জঙ্গি আস্তানা থেকে বড় একটি বিস্ফোরণের শব্দ ভেসে আসে। এর পর সোয়াটের সদস্যরা ওই বাড়ির ভেতরে গ্যাস ছোড়েন। এ সময় ঝাঁজালো গ্যাসে পুরো এলাকা আচ্ছন্ন হয়ে যায়। এর পর থেকে আবারও ওই বাড়ির আশপাশ থেকে টানা গুলির শব্দ শোনা যায়। 

এদিকে শহরের বড়হাট এলাকায় সন্দেহজনক জঙ্গি আস্তানাটি ঘেরাও করে রেখেছে পুলিশ। সকালে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দ শোনা গেছে। এ এলাকা দিয়ে কাউকে যাতায়াত করতে দেওয়া হচ্ছে না।

Post a Comment

Previous Post Next Post