নিউজ ডেস্কঃ
ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে দেশের শিক্ষিত বেকারদের একটি বড় অংশ প্রতি বছর পাড়ি
জমায় পরবাসে। কুয়েত মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম ধনী দেশ হওয়ায় রঙিন স্বপ্ন নিয়ে
অনেক বাংলাদেশিই দেশটিতে পাড়ি জমায়। তবে না বুঝে দালালের ফাঁদে পড়ে কুয়েতে
পাড়ি জমালেও টাকা তুলতেই অনেকের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়।
জানা
গেছে, প্রতিটি লেবার ভিসায় খরচ হয় কুয়েতি প্রায় ৩৫০ দিনার হতে ৪০০ দিনার,
যা বাংলাদেশি টাকায় ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ। সেখানে বাংলাদেশি ভিসা ব্যবসায়ীরা
ভিসাপ্রতি উল্টো ১ হাজার দিনার প্রস্তাব করেন নিয়োগ কর্তাকে। কেউ ১ হাজার
দিনারে ভিসা কিনলেও প্রতিপক্ষ অন্য দালালরা নিলামের মতো নিয়োগকর্তাকে আরো
বেশি দেয়ার প্রস্তাব করেন। ফলে ভিসাপ্রতি দেড় থেকে দুই হাজার কখনো কখনো তা
ছাড়িয়ে যায় আড়াই হাজার দিনারও। এছাড়া ভিসা ব্যবসায়ীদের হাতবদলের কারণে দাম
পড়ে ৬ লাখ থেকে ৭ লাখ টাকা।
দালালরা
বলেন বেতন সর্বনিম্ন ৪০-৬০ হাজার টাকা। এছাড়া মন চাইলে ওভারটাইম করলেও
পাওয়া যায় ১০-২০ হাজার টাকা। কিন্তু বাস্তবতা একেবারেই ভিন্ন। দালালরা যে
সুবিধার কথা বলেন তার অধিকাংশই বাস্তবতার সঙ্গে মেলে না। এমনটাই জানান
কুয়েত প্রবাসী বিভিন্ন ক্লিনিং, সিকিউরিটি, কোম্পানির লেবার ভিসায় আসা
অভিবাসীরা।
দুই
বছর ভিসার মেয়াদে আসা প্রবাসীদের ব্যয় তুলতে মেয়াদ ফুরিয়ে যায়। ৮ থেকে ১২
ঘণ্টা ডিউটি ও ওভার টাইম সবমিলিয়ে মাসে ৮০ থেকে ১২০ দিনার আয় হয়। এর মধ্যে
আবাসন খরচ মালিক বহন করলেও খাবার ও অন্যান্য ব্যয় নিজেকে বহন করেত হয়।
অন্যদিকে
কুয়েতের আইন অনুযায়ী যে কোম্পানি নিয়ে আসে ওই কোম্পনি ছাড়া অন্য কোথাও কাজ
করতে পারে না প্রবাসীরা। কিন্তু ভিসার ব্যয় তুলতে ঝুঁকি নিয়ে অনেকে অন্য
কোম্পানিতে কাজ করেন। তবে কাজ করা অবস্থায় ধরা পড়লে জেল অথবা দেশে পাঠিয়ে
দেয়া হয়।
এদিকে
দীর্ঘ ৮ বছর কুয়েতে বাংলাদেশের সব ধরনের ভিসা বন্ধ থাকার পর গত বছরের
মাঝামাঝি আবারও তা চালু হয়। ফলে কুয়েতে অবস্থানরত চিহ্নিত বাংলাদেশি
দালালরা আবারও প্রতিযোগিতায় নেমেছে।
কঠোর
পরিশ্রমে নিজেকে একদিকে ক্ষয় করছেন, অন্যদিকে থাকছেন তীব্র মানসিক চাপে।
তবে শেষ পর্যন্ত আকাশছোঁয়া অভিবাসন ব্যয় কোনো মতেই তুলতে পারছে না তারা।
এভাবেই
হতাশাগ্রস্ত হয়ে মানসিক সমস্যার ভুগছে বহু শ্রমিক। যার জেরে ভিসা
প্রাপ্তিতে নতুন নতুন বিধি নিষেধ ও শর্ত আরোপ করছে দেশটি। যে সমস্যার মূলেই
রয়েছে রক্তচোষা ভিসা ব্যবসায়ীদের তৎপরতা।