মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সুবিধা বন্ধের আহ্বান জাতিসংঘের


অনলাইন ডেস্কঃ জাতিসংঘের তদন্ত দল মঙ্গলবার মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীকে দেয়া বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আর্থিক ও অন্যান্য সুবিধা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে।
একই সঙ্গে তারা রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়নের অভিযোগে দেশটির সেনা কর্মকর্তাদের বিচারের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছে। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।

মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর হাত থেকে প্রাণে বাঁচতে ২০১৭ সালে সাত লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গা রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। জাতিসংঘের তদন্ত দল তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সেনারা রোহিঙ্গাদের হত্যা, তাদের বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে দেয়া, নারীদের ধর্ষণের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালাতে সেনাবাহিনী এই অভিযান চালিয়েছিল এবং তাদের বিচারের মুখোমুখি করা উচিত। জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের প্রধান মারজুকি দারুসম্যান জানায়, ‘পরিস্থিতি আগের মতোই আছে।’

জাতিসংঘ মিশনের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে যে সামরিক বাহিনী সংখ্যালঘু গোষ্ঠীগুলোর ওপর হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। আর মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায় চাপিয়েছে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর ওপর।

এক বিবৃতিতে মিশনের সদস্য ক্রিস্টোফার সিদোতি বলেন, ‘অতীত থেকে এখনও চলমান মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোতে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের দিকে নজর দেয়া জরুরি।
কে এবং কারা এর সঙ্গে জড়িত তা চিহ্নিত করে তাদের অর্থপ্রবাহ বিচ্ছিন্ন করতে চাই আমরা। যেন তাদের ওপর চাপ তৈরি হয় এবং সহিংসতা কমে যায়।’

বিশ্বের কোন কোন দেশের প্রতি এই আহ্বান জানানো হয়েছে তা অবশ্য স্পষ্ট করা হয়নি। তবে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী চীন ও রাশিয়া থেকে অস্ত্র কিনে থাকে। ইতোমধ্যে অনেক পশ্চিমা দেশ মিয়ানমারের সঙ্গে সামরিক সম্পর্ক ছেদ করেছে।

মিয়ানমারের দাবি, তারা কোনও মানবাধিকার লঙ্ঘন করেনি। তাদের নিরাপত্তা বাহিনী বেসামরিকদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেনি বরং সশস্ত্র রোহিঙ্গাদের হামলার জবাব দিয়েছে। জাতিসংঘসহ অন্যান্য সংস্থা বর্মি বাহিনীর এই সামরিক অভিযানকে ‘জাতিগত নিধনযজ্ঞ’ ও গণহত্যা হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইনভেস্টিগেটিভ মেকানিজম ফর মিয়ানমার নামে মানবাধিকার পরিষদের নতুন গ্রুপের কাছে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন তুলে দেবে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন। আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে বিচারিক প্রক্রিয়া স্থাপনে এই গ্রুপটি তৈরি করা হয়েছে।

রোহিঙ্গা সংকটে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও তিক্ত সম্পর্ক তৈরি হয়েছে মিয়ানমারের। তাদের ওপর আবারও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়।

Post a Comment

Previous Post Next Post