বিশ্ব মা দিবস; ডা. সাঈদ এনাম


ডা. সাঈদ এনাম: ২০০৩ সালে 'গ্রামীনফোন-চ্যানেল আই' বিশ্ব মা দিবস উপলক্ষে এস এম এস প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। আমি তখন ঢাকা মেডিকেলের ডা. ফজলে রাব্বি ইন্টার্ন হোস্টেলে এ থাকি আর ইন্টার্নশিপ করি। এত অল্প শব্দে মা'এর ভালোবাসা এস এম এস এ লিখে সেন্ড করা, এ নিয়ে পত্রিকার প্রথম পেজ এ এতো বড় বিজ্ঞাপন দেখে, বিরক্তি হাসি দুটোই পেয়েছিল। মায়ের ভালোবাসা দু'য়েক লাইনে লেখা কিভাবে সম্ভব?
তথাপি কি যেনো একটা লিখে সেন্ড করলাম।
........

মাস তিনেক পর হঠাৎ চ্যানেল আই অফিস থেকে ফোন...

আপনি ডা. সাঈদ এনাম?

জ্বি..
মোবাইল নাম্বার এতো...?
জ্বী..
মা দিবস উপলক্ষে আমাদের এস এম এস করেছিলেন?

হ্যা..

"মনে আছে সেটা?"

"বিরক্ত হয়ে কি যেনো লিখেছিলাম। মনে নেই"

তারপর ও বলুন?

"আচ্ছা মা তুমি বলো দু লাইনে তোমার ভালোবাসা নিয়ে লিখা যায়?" এ রকম কিছু একটা...

"হ্যা, রাইট। কয়েক লক্ষ এস এম এস থেকে মনে হয়েছে আপনার এস এম এস টাই চমৎকার..."

"তাই। মাই গড...!!" (আমি অবাক হলাম)

তিনি জিগ্যেস করলেন, "আপনি এখন কোথায়...?"

আমি তখন ইন্টার্নশিপ শেষ করে গুলশান গ্রুপ ক্লিনিকে আবাসিক মেডিকেল অফিসার হিসাবে চাকুরী করি। এটা এখন ইউনাইটেড হাসপাতাল হয়েছে।

কুটনৈতিক পাড়ায় স্থাপিত এই ক্লিনিকে তখন সব  ডিপ্লোমেট, সেক্রেটারি আর নামী দামী  লোকেরা যেতেন। ওখানে চাকুরীর সুবাদে বেশ কিছু গুনী মানুষের সাথে পরিচয়  হয়। যাদের সাথে পরিচিত হই তারমধ্যে ছিলেন নোবেল প্রাইজের জনক আলফ্রেড নোবেলের সম্পর্কে নাতনী (একটি দাতব্য মুলক প্রতিস্টানের কাজের জন্য তিনি সে সময় বাংলাদেশে ছিলেন)।

পরিচয় হয় উপমহাদেশের প্রথম মুসলিম মহিলা চিকিৎসক ডা জোহরা বেগম কাজী। তিনি ক্লিনিকটি তে তিন দিন ভর্তি ছিলেন। রোজ সকালে ফলোআপের পর তার পাশে বসে নানান গল্প করতাম।

সফেদ পাঞ্জাবী পরে প্রয়াত চিত্র নায়ক রাজ্জাক একবার এসছিলেন তলপেটা ব্যাথা নিয়ে। ভেবেছিলেন তার এক্যুট এপেন্ডিসাইটিস। আসলে ছিলো ইউ টি আই। সাথে ছিলেন ছেলে বাপ্পা রাজ।

যাক গে,  ওপাশ থেকে ফোনে চ্যানেল আই'র কর্মকর্তা বললেন,
"আপনি গুলশানে। আসতে পারবেন আমাদের চ্যানেল আই স্টুডিও তে। আপনার একটা সাক্ষাতকার কার ধারন করা হবে।  সেটা বিশ্ব মা দিবস উপলক্ষে প্রচার হবে। আর যদি সম্ভব হয় তবে আপনার আম্মা এবং আব্বাকে আনবেন। আমাদের চেয়ারম্যান ফরিদুর রেজা সাগর স্যার ও তাই চান।

"শিওর। আমি আসবো এবং আব্বা আম্মা কে নিয়েই আসবো....", বলে ফোন রেখে দেই।

যাক গে, মা'কে নিয়ে কয়েক লক্ষ এস এম এস এর মধ্যে একজন ডাক্তারের লেখাটাই সেরা শুনে ভালো লাগে।

জনাব ফরিদুর রেজা সাগর ও গ্রামীন ফোনের তৎকালীন মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ এনতেখাব মাহমুদ এর সাথে সৌজন্য সাক্ষাত  দিতে ও গিফট আনতে তৎকালীন সিদ্বেশ্বরী রোড এ চ্যানেল আই অফিসে যাই। অনুষ্ঠান টি "চ্যানেল আই" তে লাইভ দেখায়।

টিভিতে নিজেকে দেখে দারুন রোমাঞ্চিত হই।

ডা. সাঈদ এনাম
সাইকিয়াট্রিস্ট,
ডি এম সি, কে-৫২।

Post a Comment

Previous Post Next Post